1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভুয়ার স্রোতে ঠিক খবর বুঝবেন কী করে?

২৪ অক্টোবর ২০২৩

ইসরায়েল-হামাস সংঘাতের পর শুরু হয়েছে মিথ্যা খবর ও ভিডিওর স্রোত। কীভাবে বুঝবেন, কোনটা ঠিক, কোনটা ভুয়া?

https://p.dw.com/p/4Xw5v
যুদ্ধ বা সংঘাতের সময় কী করে বুঝবেন কোনটা ঠিক বা কোনটা ভুল খবর?
যুদ্ধ বা সংঘাতের সময় কী করে বুঝবেন কোনটা ঠিক বা কোনটা ভুল খবর?ছবি: DW

একটি টিকটক ভিডিওতে দেখানো হয়েছে প্রচুর হামাস যোদ্ধা প্যারাগ্লাইড করে ইসরায়েলে ঢুকে পড়েছে। সত্যিই কি তাই হয়েছিল?

আরেকটি ভিডিওর দাবি, বিখ্যাত ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো একটি ম্য়াচের পর ফিলিস্তিনি পতাকা হাতে তুলে নিয়েছিলেন। এটাও কি সত্যি?

ইসরায়েল-হামাল সংঘাত শুরুর পর থেকে এরকম প্রচুর ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ঘুরছে।

ডিডাব্লিউর ফ্যাক্ট চেক টিম জানাচ্ছে, উপরে যে দুইটি ভিডিওর কথা উল্লেখ করা হয়েছে, দুইটিই ভুয়া

অনলাইনে বিকৃত তথ্য, ভুয়া তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। এর মধ্যে থেকে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য বেছে নেয়াটাও একটা চ্যালেঞ্জ। কীভাবে মানুষ জানতে পারবেন, মধ্যপ্রাচ্যে ঠিক কী ঘটছে?

সম্প্রতি অ্যাটলান্টিক কাউন্সিলের ডিজিটাল ফরেনসিক রিসার্চ ল্যাবের ম্যনেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ডি কারভিন ডিডাব্লিউকে বলেছেন, ''ইসরায়েল-হামাস সংঘাতের পর এখন তা নিয়ে এত বেশি মিথ্যা প্রচার, ভুল তথ্য, প্রোপাগান্ডা, বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে, যা আগে আমি কোনো সংঘাতের ক্ষেত্রে দেখিনি।''

এই পরিস্থিতিতে কীভাবে আপনারা ঠিক তথ্য বেছে নেবেন, কীভাবে ভুয়া তথ্য এড়িয়ে য়াবেন, তার পরামর্শ দিয়েছে ডিডাব্লিউর ফ্যাক্ট চেকিং টিম।

ভুয়া তথ্যের জের

সংঘাতের সময় অনেক তথ্য আমাদের বিষন্ন করে, বিপর্যস্ত করে, উত্তেজিত করে তোলে।

একটি ভিডিওর কথা বললে বিষয়টি আরো স্পষ্ট হবে।  এই ভিডিওটি পরীক্ষা করে ফ্যাক্ট চেকিং টিম জানিয়েছে, এটা ভুয়া। সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ইসরায়েলি সেনা দুইটি ফিলিস্তিনি বাচ্চা মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে যাচ্ছে। এই ভিডিও মানুষের মনে রাগ, দুঃখ বা অন্য আবেগ তৈরি করতে পারে।

এই ভিডিওর প্রভাবে আপনি কোনো এক পক্ষকে সমর্থন ও অন্য পক্ষকে নিন্দা করতে পারেন।

ফেক নিউজ স্টরি বা ভুয়া খবরের ভিডিও বা লেখা ঠিক এই কাজটিই করে।  মানুষের আবেগকে প্রবলভাবে উসকে দেয়।

মনোবিদ স্তেফান লিউয়েনডাউস্কি ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন, ''ভুয়া খবর মানুষকে উত্তেজিত করে তোলে। আমরা জানি যে, মানুষ এজন্যই ভুয়া তথ্য প্রচার করে। এই তথ্য খুব কম সময়ে ভাইরাল হয়ে যায়।''

ফলে একটু সাবধান হওয়ার দরকার আছে। নিচের প্রশ্নগুলো একবার পড়ে দেখুন। এটা পড়লেই বুঝবেন, কোনো তথ্যের ক্ষেত্রে আপনার কী ধরনের সতর্কতা জরুরি।

এই ভিডিও বা টেক্সট পড়ে আমার মনের অবস্থা কী হয়েছে? এটা কি আপনার কিছু মতামতের প্রতিফলন ঘটিয়েছে বলে আপনার ভালো লেগেছে বা আপনাকে উত্তেজিত করেছে? এই খবর প্রচার করার ক্ষেত্রে কার স্বার্থ থাকতে পারে এবং কেন সে এই তথ্য প্রচার করছে? এর বিতর্কিত উৎস সম্পর্কে কি কোনো ইঙ্গিত আছে? আপনার গাট ফিলিং আপনাকে কি বলছে?

সোর্স চেক করুন

এই সংঘাতের সময় অনেকে নির্দিষ্ট অ্যাপের মাধ্যমে খবর পড়েন। অনেকে আবার সামাজিক মাধ্যমে ভাসতে থাকা অনেক খবর পড়তে ভালোবাসেন।

প্রতিষ্ঠিত, পরিচিত ও বিশ্বস্ত নিউজ ব্র্যান্ড সাধারণত আপনাকে ঠিক খবর সরবরাহ করার চেষ্টা করে। কিন্তু অন্য ক্ষেত্রে পড়ুয়া ও খবর সরবরাহকারীর মধ্যে এই বিশ্বাসের সম্পর্কটা থাকে না।

সামাজিক মাধ্যমে কোথা থেকে এই খবরটা আসছে, সেটা জানা ও বোঝাটা খুব জরুরি।  আপনি যদি সূত্র জানতে পারেন, তাহলে বুঝতে পারবেন, ভিডিও বা তথ্য কতটা ঠিক।

যদি সামাজিক মাধ্যমটি কোনো ব্যক্তি চালান, তাহলে আগে দেখুন ওই খবর আর কারা প্রকাশ করেছে। তারা আগে যে খবর প্রচার করেছে সেই খবরগুলিও দেখুন। তাহলে তাদের সম্পর্কে একটা আন্দাজ পাবেন। দেখার চেষ্টা করুন, কারা তাদের অর্থ দেয়। তারা কোনো সরকার বা কোনো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত কি না। 

এই অ্যাকাউন্টে একটি ওয়েবসাইটের কথা বলা থাকবে। সেখানে গিয়ে অ্যাবাউট আস-টা দেখুন। তাহলে এই খবরগুলো পেয়ে যাবেন।

তাদের ভিডিওর ক্ষেত্রে পারলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করন। এর জন্য একটা ছবি বা স্ক্রিন শট তুলুন এবং গুগল ইমেজ বা টিন আইতে গিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করন।

বিষয়বস্তু দেখুন

এই মাসের শুরুতে একটা ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে আসে। মিশর প্রচুর কামান নিয়ে গাজায় ঢুকেছে। তারাও সংঘাতে যোগ দিয়েছে। ডিডাব্লিউর ফ্যাক্ট চেক দেখে এই দাবির কোনো সত্যতা নেই।

যে তথ্য আসছে, তা অন্য জায়গায় খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন, তারাও সেই খবর দিচ্ছে কি না। এরপর ফ্যাক্টচেক ডট অরগের মতো অনেক ওয়েবসাইট আছে যেখানে গিয়ে আপনি ভুয়া তথ্য যাচাই করতে পারবেন।

থমাস স্প্যারো/জিএইচ/ডিডাব্লিউ